Skip to main content

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা।

পেয়ারা খাওয়া সাস্থ্যের জন্য উপকারিতা জেনে নিন ছবিতে ক্লিক করুণ- 




অন্যান্য ফলের তুলনায় পেয়ারার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। বিশেষ করে ভিটামিন ‘সি’ এর পরিমাণ এত বেশি যে আমলকী ছাড়া অন্য যে কোনো ফলে এত ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায় না। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক পেয়ারার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।

পেয়ারার পুষ্টি গুনাগুণ : 

এটি একটি পুষ্টিকর ফল। ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি । অন্যান্য সাইট্রাস ফল, যেমন—কমলালেবুর তুলনায় পেয়ারায় ৫ গুণ বেশি ভিটামিন-সি রয়েছে। রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন।

সেইসঙ্গে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড এবং নিকোটিনিক অ্যাসিড।

পেয়ারায় ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-বি কমপ্লেক্সও পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় রয়েছে ১৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ক্যালরি ৭, ভিটামিন-এ ২৫০ আই ইউ, থিয়ামিন ০.০৭ গ্রাম, নিয়াসিন ১.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৩০২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৯ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.১ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম।

পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতা : 

অনেকে পেয়ারাকে একটি সাধারণ ফল মনে করে অবহেলা করেন। খেতে চান না। তবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে এই ফলে থাকা পুষ্টি উপাদান ও ওষধি গুণাগুণ জানার পর তারাও ফলটি খেতে উৎসাহিত হবেন। নিচে ফলটির কিছু উপকারী দিক আলোচনা করা হলো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : 

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে। এছাড়াও ফলটিতে রয়েছে ক্যারটিনয়েড, পলিফেনল, লিউকোসায়ানিডিন ও অ্যামরিটোসাইড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। দেহের কোথাও কেটে গেলে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে হার্টকে সুস্থ রাখে :

গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে আসে। এছাড়াও পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি। পটাশিয়াম নিয়মিত হৃদস্পন্দনের এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা নিয়মিত ভাবে খেলে তা কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকিও কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে : 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারার রসে ও পেয়ারা পাতায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উপাদান থাকায় ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় এটি খুবই কার্যকর। এজন্য কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুঁড়ো করে ১ চা চামচ পাতা ১ কাপ গরম জলেতে দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রেখে তারপর ছেঁকে নিয়ে পান করা যেতে পারে প্রতিদিন।

ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে : 

বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস সারিয়ে তুলতে পেয়ারার ভূমিকা রয়েছে। ফলটিতে উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় এটি শ্লেষ্মা কমিয়ে দেয়। এছাড়া ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে কাঁচা পেয়ারা কার্যকর ভূমিকা রাখে।

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে : 

কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভাল উৎস। আর এই ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখা দরকার।

মাসিকের ব্যাথা দ্রুত উপসম করে :

অনেক মেয়েরই মাসিক চলাকালিন পেট অনেক ব্যথা হয় এবং ব্যাথার ঔষধ খেয়ে থাকেন। এ সময় যদি কেউ পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খায় তাহলে তার মাসিককালিন ব্যাথা দ্রুত সময়ে উপসম হতে পারে।

থাইরয়েড গ্রন্থি কার্যকরী রাখতে সাহয্য করে : পেয়ারায় কপার সমৃদ্ধ ট্রেস উপাদান রয়েছে। তাই থাইরয়েড গ্রন্থি কার্যকরী বজায় রাখতে পেয়ারা খুব ভাল অবদান রাখতে পারে। তাছাড়া এটি থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে ফলে থাইরয়েড গ্রন্থি থাকে কার্যকর।

শরীরের পেশী এবং স্নায়ু শিথিল রাখতে ভূমিকা রাখে : 

পেয়ারা একটি ম্যাঙ্গানিজ সমৃদ্ধ ফল। এই গুরুত্বপুর্ণ খাদ্য উপাদানটি আমাদের খাদ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি শোষণ করে শরীরের সকল খাবারের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এছাড়া পেয়ারা একটি ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ ফল যা আমাদের স্নায়বিক আরাম প্রদানে ভুমিকা রাখে। এটা শরীরের পেশী এবং স্নায়ু শিথিল করতে সাহায্য করে। তাই একটি কঠিন কাজ করার পরে, একটি পেয়ারা খেয়ে পেশী শিথিল সহ কর্ম সিস্টেমে একটি চমৎকার শক্তির সঞ্চার ঘটানো যেতে পারে।

পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে : 

যে কোন ব্যকটেরিয়া সংক্রমণ বা পেটের গোলযোগে সবচেয়ে কার্যকরী হল পেয়ারা৷ এই ফলটিতে অ্যাস্ট্রিজেন্ট ও অ্যান্টি-মাইক্রোবাল উপাদান থাকে ফলে এটি পাকস্থলীর স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে৷

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে :

পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

বংলাদেশসহ প্রায় প্রতিটি এশিয়ান দেশে পেয়ারা একটি খুব সাধারণ ও সহজলভ্য ফল। এর আলাদা ধরনের স্বাদ ও গন্ধ ছাড়াও এর মাঝে রয়েছে স্বাস্থ্য উন্নত করার বহু গুনাগুন। শুধু ফলেই না এর গাছের পাতায়ও রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিনে একটি করে আর না হলে সপ্তাহে অন্তত একটি করে হলেও পেয়ারা খাওয়া প্রয়োজন।

আপনিও নিয়মিত পেয়ারা খান এবং অন্যকেও খেতে বলুন। দয়া করে লেখাটি লাইক শেয়ার করে মানুষের মাঝে জানিয়ে দিন। সবাই ভালো থাকবেন এই কামনা করি। আমার জন্য আর্শিবাদ করবেন। ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

 

ঘি খাওয়া অনেক উপকার।

গাওয়া ঘিয়ের উপকারিতা  জেনে নিন লিংকে ক্লিক করুন কল্যাণকর বলেই হয়ত এখন পশ্চিমাদেশেও ঘি দিয়ে স্পা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে অবস্থিত এরকমই একটি প্রতিষ্ঠান ‘ফোর মুন স্পা’। সুখী ও ভালো থাকার জন্য তারা বিভিন্ন কার্যক্রম করেন। এই প্রতিষ্ঠানের ডা. অ্যামি চ্যাডউিইক সম্প্রতি স্বাস্থবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঘিয়ের নানান উপকারী দিক তুলে ধরেন।  উপকারিতা: দাহরোধী:  স্বাস্থ্যকর ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের জন্য চাই স্বাস্থ্যকর চর্বি। ঘাস খেয়ে বেড়ে ওঠা গাভীর দুধ থেকে তৈরি ঘিয়ে মেলে ওমেগা থ্রি ও ওমেগা সিক্স ফ্যাট বা চর্বি। ছোট ও মাঝারি ‘চেইন’য়ের এ্ চর্বি প্রদাহের মাত্রা মৃদু করতে সাহায্য করে। কারণ এই চর্বি দ্রুত ভাঙে এবং হজম হয় সহজে। ফলে হজম প্রক্রিয়া, গলব্লাডার ও কোষের স্বাভাবিক কার্যাবলী বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। অ্যালার্জি কমায়:  ‘ল্যাকটোজ ইনটোলেরেন্ট’ বা দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের যাদের পেটের গড়বড় হয় তাদের জন্য আদর্শ খাবার হতে পারে ঘি। চ্যাডউইক বলেন, “মাখনকে ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করে ঘি তৈরি হয়, ফলে এই সকল আমিষ উপাদান পাত্রে থেকে যায়, শুধু চর্বি অ...

কিডনি সুস্থ রাখতে করণীয়।

  কিডনি সুস্থ রাখতে করণীয় জেনে নিন ছবিতে ক্লিক করুণ- শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে কিডনি সুস্থ রাখা আবশ্যিক। কিডনির অবস্থা ঠিক থাকলে শরীরে হরমোন ব্যালান্স ঠিক থাকে। এছাড়াও মানবদেহে ছাকনির কাজ করে এই অঙ্গ। তাই এটি সুস্থ রাখা বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু ঠিক কী কী করণীয়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রাথমিকভাবে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ থাকে কিডনি। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী কী- শরীরের হাইড্রেটেড রাখা প্রয়োজন। তাই যথেষ্ট পরিমাণে জল পানের পরামর্শ দেন অনেকেই। দিনে ৮ গ্লাস জল পান স্বাভাবিক বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের, যাতে মূত্রের রং হালকা হলুদ বা রঙহীন হয়। ডায়েট ঠিও রাখা দরকার কিডনি ভালো রাখতে। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ কিডনির অসুখ ডেকে আনার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই স্বাস্থ্যকর এবং কম সোডিয়াম যুক্ত, কম কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার খাওয়া বাঞ্ছনীয়। শরীরচর্চার কোনও বিকল্প নেই। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ফলে ওজন, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে। রক্তের ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বের করে দিয়ে ছাকনির কাজ করে কিডনি। তাই আপনারও দায়িত্ব কিডনিকে সুস্থ রাখা। অ্যালকোহল, ওষুধ ইত্যাদি...