Skip to main content

বাচঁতে হলে টিকা দিন করোনাকে বিদায় দিন।

 

টিকা পেয়েও নিতে চায় না ধনী দেশের অনেকে! 

ছবিতে ক্লিক করুন--




সারা বিশ্বে আবারো করোনার ঊর্ধ্বগতি৷ জার্মানির করোনা পরিস্থিতিও খুব খারাপ হওয়া সত্ত্বেও কিছু মানুষ এখনো টিকা নিতে চায় না৷ তারা নানাভাবে টিকার বিরোধিতা করছে, এমন কি সংঘর্ষে জড়িয়ে পুলিশকে পর্যন্ত ধরে পেটাচ্ছে৷


করোনা ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে দুবছর আগে৷ তারপর থেকেই বিশ্ব জুড়ে সকলেরই এক প্রশ্ন, কবে বের হবে করোনার প্রতিষেধক? নানা জল্পনা কল্পনা, গবেষণা আর দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যখন টিকা এলো তখন কেউ কেউ টিকা নেবেন না, শোনা যাচ্ছিল৷ প্রথমদিকে বিষয়টা আমার তেমন বিশ্বাসই হচ্ছিল না৷

করোনার বিধিনিষেধে মানুষ ঘরবন্দি থাকতে চায়নি, বিরক্ত হয়ে নিয়মকানুন মানার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে, বিরোধিতা করেছে জার্মানির অনেক মানুষ৷ শুধু জার্মানি নয়, অন্যান্য অনেক দেশেই হয়েছে এমনটা৷ ঘরবন্দি থাকতে থাকতে আমরা অনেকেই পাগলপ্রায় কাজেই কিছুটা হলেও বুঝতে পারি৷ কিন্তু করোনার টিকা না নেওয়ার যুক্তি বোঝা বেশ দায়৷ বিশেষ করে শিক্ষার হারে এগিয়ে থাকা জার্মানির মতো উন্নত একটি দেশে

মহামারি সংক্রমণ ঠেকাতে জার্মানিতে নতুন বিধিনিষেধ ও টিকা বাধ্যতামূলক করায় মানুষ আবারো বিক্ষোভ করেছে, বিশেষ করে জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে৷ স্যাক্সনির বিক্ষোভে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হওয়ায় বেশ কয়েকজন পুলিশ আহতও হয়েছেন৷ বলাই বাহুল্য যে এসব বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই টিকা বিরোধিরা বিক্ষোভ করছে৷ সব বিক্ষোভে না হলেও বেশ কয়েকটিতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে , এমন কি এক ঘটনায় আদালতে কয়েকজনকে শাস্তি পর্যন্ত  দেওয়া হয়েছে৷ এসব নিয়ে মামলাও হয়েছে বেশ কয়েকটা৷ কোনো কোনো বিক্ষোভে ভাঙচুর হয়েছে , ঘটেছে আগুন ধরিয়ে দেয়ার মতো ঘটনাও৷


এসব ঘটনা শুধু জার্মানিতে নয়, করোনার বিধিনিষেধ বা টিকা বিরোধী বিক্ষোভ জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, স্পেনসহ ইউরোপের নানা দেশেই হয়েছে৷ আমেরিকাও এর বাইরে নয়! এমন উন্নত দেশেও এরকম ঘটনা! ঠিক যেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার মতো! অথচ জার্মানিতে মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চত করে সরকার৷  মানুষের খাওয়াপরার কষ্ট নেই, প্রতিটি নাগরিকেরই স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে৷ আর তারাই কিনা টিকা নিতে চায় না! উল্টো টিকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আর বিক্ষোভে পুলিশ বাধা দেয়ার তাদের ধরে পেটায়!

আর বাংলাদেশের মতো অনেক দেশের মানুষ এখনো করোনা ভ্যাকসিনের দুটো ডোজই পায়নি, বাংলাদেশে বুস্টার কেবল দেয়া শুরু হয়েছে৷ আফ্রিকায় প্রতি চারজন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে তিনজনই টিকা নেয়ার সুযোগই পাননি৷

অথচ জার্মানিতে সুযোগ পেয়েও অনেক মানুষ করোনা টিকা নিচ্ছে না৷ এর কারণ কি সরকারের প্রতি অবিশ্বাস, রাজনীতি এবং গণতন্ত্রের বিষয়ে হতাশা  নাকি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আস্থা নেই? টিকা বিরোধীদের কেউ কেউ  বলছেন, কড়া বিধিনিষেধ বা টিকা বাধ্যতামূলক করে নাকি মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে৷ তবে বিভিন্ন দেশ বা অঞ্চল ভেদে বিক্ষোভের কারণের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷

এ বিষয়ে বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির বিক্ষোভের মূলে বামপন্থি আন্দোলন, আর পূর্ব জার্মানিতে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ কট্টর ডানপন্থি দলের সদস্য ৷ অন্যদিকে জার্মানির জিগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী ইয়োহানেস কিস জানিয়েছেন, হতাশা থেকেই নাকি এসব বিক্ষোভ৷  আর এই হতাশা কেবল করোনা নীতি নিয়েই নয়, তাদের মধ্যে গণতন্ত্র এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নিয়েও রয়েছে হতাশা ৷

মহামারি করোনায় জার্মানিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ১১৪.০০০ মানুষ৷ আর সারা বিশ্বে করোনা কেড়ে নিয়েছে ৫,৪৭ মিলিয়ন মানুষের প্রাণ৷ এতেও কি আমাদের টনক নড়েনি!  আশার কথা করোনার টিকা পাওয়ার পর বিশ্বে মৃত্যুহার কমেছে এবং টিকা নেওয়ার পরেও যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা সহজেই সেরে উঠেছেন৷ 

করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা এ পর্যন্ত মারা গেছেন তাদের একটি বড় অংশের টিকা দেয়া ছিল না৷ জার্মানিতে সংক্রমণের ঊর্ধগতির একটা বড় কারণ, মানুষের টিকার প্রতি অনীহা৷ পশ্চিম ইউরোপে টিকা নেয়ায় পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর মধ্যে একটি জার্মনি৷ জার্মানিসহ তথাকথিত উন্নত দেশগুলোর কিছু মানুষ টিকা না নিয়ে ইচ্ছেমতো করোনা ছড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে৷ আর কিছুদিন পরপরই আসছে করোনার নতুন নতুন সংস্করণ৷

সত্যিই, কত গরিব দেশের মানুষ টিকা চেয়েও পায়না, আর ধনী দেশের মানুষেরা টিকা পেয়েও নিতে চায়না৷ হায়রে পৃথিবী! 

আমার লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

 

ঘি খাওয়া অনেক উপকার।

গাওয়া ঘিয়ের উপকারিতা  জেনে নিন লিংকে ক্লিক করুন কল্যাণকর বলেই হয়ত এখন পশ্চিমাদেশেও ঘি দিয়ে স্পা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে অবস্থিত এরকমই একটি প্রতিষ্ঠান ‘ফোর মুন স্পা’। সুখী ও ভালো থাকার জন্য তারা বিভিন্ন কার্যক্রম করেন। এই প্রতিষ্ঠানের ডা. অ্যামি চ্যাডউিইক সম্প্রতি স্বাস্থবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঘিয়ের নানান উপকারী দিক তুলে ধরেন।  উপকারিতা: দাহরোধী:  স্বাস্থ্যকর ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের জন্য চাই স্বাস্থ্যকর চর্বি। ঘাস খেয়ে বেড়ে ওঠা গাভীর দুধ থেকে তৈরি ঘিয়ে মেলে ওমেগা থ্রি ও ওমেগা সিক্স ফ্যাট বা চর্বি। ছোট ও মাঝারি ‘চেইন’য়ের এ্ চর্বি প্রদাহের মাত্রা মৃদু করতে সাহায্য করে। কারণ এই চর্বি দ্রুত ভাঙে এবং হজম হয় সহজে। ফলে হজম প্রক্রিয়া, গলব্লাডার ও কোষের স্বাভাবিক কার্যাবলী বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। অ্যালার্জি কমায়:  ‘ল্যাকটোজ ইনটোলেরেন্ট’ বা দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের যাদের পেটের গড়বড় হয় তাদের জন্য আদর্শ খাবার হতে পারে ঘি। চ্যাডউইক বলেন, “মাখনকে ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করে ঘি তৈরি হয়, ফলে এই সকল আমিষ উপাদান পাত্রে থেকে যায়, শুধু চর্বি অ...

কিডনি সুস্থ রাখতে করণীয়।

  কিডনি সুস্থ রাখতে করণীয় জেনে নিন ছবিতে ক্লিক করুণ- শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে কিডনি সুস্থ রাখা আবশ্যিক। কিডনির অবস্থা ঠিক থাকলে শরীরে হরমোন ব্যালান্স ঠিক থাকে। এছাড়াও মানবদেহে ছাকনির কাজ করে এই অঙ্গ। তাই এটি সুস্থ রাখা বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু ঠিক কী কী করণীয়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রাথমিকভাবে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ থাকে কিডনি। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী কী- শরীরের হাইড্রেটেড রাখা প্রয়োজন। তাই যথেষ্ট পরিমাণে জল পানের পরামর্শ দেন অনেকেই। দিনে ৮ গ্লাস জল পান স্বাভাবিক বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের, যাতে মূত্রের রং হালকা হলুদ বা রঙহীন হয়। ডায়েট ঠিও রাখা দরকার কিডনি ভালো রাখতে। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ কিডনির অসুখ ডেকে আনার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই স্বাস্থ্যকর এবং কম সোডিয়াম যুক্ত, কম কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার খাওয়া বাঞ্ছনীয়। শরীরচর্চার কোনও বিকল্প নেই। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ফলে ওজন, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে। রক্তের ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বের করে দিয়ে ছাকনির কাজ করে কিডনি। তাই আপনারও দায়িত্ব কিডনিকে সুস্থ রাখা। অ্যালকোহল, ওষুধ ইত্যাদি...